আইসিসের কবলে দিনগুলি (ওয়ার ডায়েরি সিরিজ – ২)

বই পরিচিতি

ইসলামিক স্টেটের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে সিরিয়ার রাক্বা শহরটি। অল্প কিছুদিনের ভেতরেই তছনছ হয়ে যায় সেখানকার অধিবাসীদের সাজানো জীবন, নানাবিধ আতঙ্কে কাটতে থাকে শহরবাসীর প্রতিটি মুহূর্ত।

টেলিভিশনের বেচাকেনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে; পায়জামার আকার ঠিক না হলে কপালে খারাবি আছে; আর মোবাইলে কথা বলা? সেটা তো ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ!

কোনো সাংবাদিকই সেখানে ঢুকতে পারে না। আর কেউ যদি পশ্চিমা গণমাধ্যমের সাথে ভুলেও কিছু শেয়ার করে, তাহলে শিরশ্ছেদই তার একমাত্র পরিণতি।

এত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও মাসখানেক চেষ্টার পর অবশেষে আল-শারক্বিয়া ২৪ (টুয়েন্টি ফোর) নামে এক ছোট এক্টিভিস্ট গ্রুপের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয় বিবিসি। তাদেরই এক কর্মী নিয়ে নেন দুঃসাহসী এক সিদ্ধান্ত- আইএস এর অধীনে থাকার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ব্যক্তিগত ডায়েরির মতোই সবার সাথে শেয়ার করবেন তিনি।

নিজের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের আইসিসের হাতে প্রাণ হারাতে দেখেছেন তিনি, দেখেছেন সুন্দর শহরটাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে, স্থানীয় অর্থনীতিকে ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর ক্ষণ গুণতে।

এই সবকিছু দেখেই প্রতিবাদী হয়ে উঠেছেন সামির; হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন কলমকেই, যে হাতিয়ার দিয়ে তিনি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে চান ইসলামিক স্টেটের স্বরুপ, শোনাতে চান ফেলে আসা সোনালী দিনগুলোর গল্প।

হ্যাঁ, এটাই সামিরের কাহিনি।

অনুবাদক পরিচিতি

মুহাইমিনুল ইসলাম অন্তিক; ১৯৯২ সালে ময়মনসিংহ শহরে জন্ম। সরকারি চাকুরে বাবার কল্যাণে ঘুরেছেন দেশের বিভিন্ন জেলায়, যা তার অভিজ্ঞতার ঝুলিকে করেছে বৈচিত্রময়। ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি এবং সেখানেই সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগ থেকে। 

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতেই শখের বশে লেখালেখির সাথে যুক্ত হন, যা ধীরে ধীরে ডালপালা মেলতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞান বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘জিরো টু ইনিফিনিটি’তে যোগদান করেন কন্ট্রিবিউটর হিসেবে। সেখানে বিভাগীয় সম্পাদক থেকে পরবর্তীতে সহ-সম্পাদক হয়ে যাত্রার ইতি টানেন তিনি। পাশাপাশি চলতে থাকে বাংলা ও ইংরেজি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় লেখালেখি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪র্থ বর্ষে থাকাকালেই প্রকাশিত হয় তার প্রথম বই ‘ক্রিপ্টোলজি: গোপন সংকেতে রহস্যভেদ (১ম খণ্ড)’। কাজ করেছেন বিভিন্ন সংকলন গ্রন্থের লেখক হিসেবে। বেশ কিছু বইয়ের সম্পাদনার কাজও করেছেন। 

পেশাগত জীবনে মুহাইমিনুল ইসলাম প্রথাগত পথের বাইরে। প্রকৌশলবিদ্যার শিক্ষার্থী হলেও তিনি কাজ করছেন বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যতিক্রমধর্মী মিডিয়া রোর বাংলার ডেপুটি এডিটর ইন চিফ হিসেবে। পাশাপাশি কো-ফাউণ্ডার ও ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে আছেন এ দেশীয় তরুণদের ওয়ান-স্টপ প্লাটফর্ম ওয়াইএসআই বাংলা লিমিটেডে। 

ইতিহাস, ধর্ম, বিজ্ঞান, মুক্তিযুদ্ধ ও গোপন সংকেত নিয়ে পড়াশোনা করেই অবসর সময় কাটে তার। লেখালেখিকে নিজের অক্সিজেন বলা এ মানুষটি সামনের দিনগুলোতে আরও তথ্যনির্ভর সব বই উপহার দিতে চান এ দেশের পাঠকদের। স্বপ্ন দেখেন পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দেবেন এমন এক জগতের সাথে, যার সন্ধান আগে বাংলা ভাষায় খুব কম মানুষই দিয়েছে।